গাজীপুরের তেলিপাড়া, চান্দনা ও মৌচাক এলাকায় আলাদা তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত ছিল। আগুনে কম্পিউটার, বই, আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। ঘটনার পর পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে এ আগুনের ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি জানিয়েছেন গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা বলেন, রাতে তেলিপাড়া এলাকায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সংলগ্ন টিএনটি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে রাত ২টা ৪৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে পৌণে এক ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে স্কুল ভবনের ৭টি শ্রেণিকক্ষ, অফিস কক্ষ, টেবিল- চেয়ার, আলমারি, বই খাতা, কম্পিউটার, ল্যাপটপসহ অন্যান্য মালামাল পুড়ে গেছে।
এদিকে, একই রাতে পূর্ব চান্দনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ওই স্কুলটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের কথা ছিল। আগুনে স্কুলের একটি আলমারি ও বইপত্র পুড়ে গেছে। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।
কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ইফতেখার রায়হান বলেন, রাতে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকার বাঁশতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে অফিস কক্ষ, শিক্ষা উপকরণ সামগ্রী পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাঁশতৈল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগামীকাল ওই স্কুলে ভোট কেন্দ্র রয়েছে। শনিবার (৬ জানুয়ারি) ভোর রাতে স্কুলের অফিস কক্ষের তালা ভেঙে ভিতরে ঢূকে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ততক্ষণে অফিস কক্ষের আসবাবপত্র পড়ে ছাই হয়ে যায়।
কালিয়াকৈর নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী জানান, আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিদর্শন করার জন্য পাঠানো হয়েছে।
টিএন্ডটি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ওসমান আলী বলেন, আগুন স্কুল ভবনের অফিস, শ্রেণিকক্ষ, অফিসে রাখা সকল নথিপত্র, কম্পিউটারসহ সব পড়ে গেছে। এখন সরকারি সহায়তা না পেলে ৭ শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ব্যাহত হবে।
একই বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী আফাজ উদ্দিন বলেন, রাতে মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে বের হয়। তখন স্কুলের কোনায় আগুন দেখে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেই। আগুনের ভয়াবহতায় এরপর আমার আর কিছু মনে নেই।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোকসেদ আলম বলেন, এটা বিএনপি জামায়াত দোসরদের কাজ। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী এদেশে যেভাবে জ্বালাও পোড়াও করেছিল এখন তাদের প্রেতাত্মারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ট্রেনে আগুন দিয়েছে। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ ব্যাপারে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আবু তোরাব মোহাম্মদ সামছুর রহমান বলেন, নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের সনাক্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে স্কুলের সব পড়ে গেছে। এ ঘটনায় দায়ীদের বিচার দাবি করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
ইব্রাহিম শরীফ মুন্না
Email: [email protected]
© 2022 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || SongbadSomoy.com