সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের পরেও বাজারে সংকট কাটছে না। এক সপ্তাহ না পেরোতেই আবারও বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। দাম বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি মূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজারে অভিযান শুরু করা হলেও এর প্রভাব কমই দেখা যাচ্ছে। অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। মাছ-মাংস, সবজিও কিনতে হচ্ছে বেশ দাম দিয়ে। সব মিলিয়ে সীমিত ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বাজার থেকে সুখবর নেই।
ব্যবসায়ীদের ঢাকাসহ সারা দেশে দুদিন খারাপ আবহাওয়ার কারণে বৃষ্টি হওয়ায় শাক সবজি, মাছ, মুরগি ও গরুর মাংসের দাম কেজি প্রতি ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুরে কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে যে গরুর মাংস ছিলো ৬০০ টাকা কেজি তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকায়। আর যে আলু বিক্রি হচ্ছিলো ৫০ টাকা কেজি সেই নতুন আলু আজকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পেঁপে, গাজর, শশা, মুলা, ভেন্ডি, কচুর লতি, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, শিম, পটল, মটরশুঁটি, টমেটোসহ শীতের সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও প্রতিটি পণ্যের দাম অন্তত ২০-৩০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মিরপুরের মাংস ব্যবসায়ী ফারুক আহমেদ জানান, গত সপ্তাহে আমরা ৬০০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করেছি। কিন্তু আজকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি করছি। মূলত গত সপ্তাহে আমরা বাধ্য হয়ে বিক্রি করেছিলাম। ৬০০ টাকায় মাংস বিক্রি করলে ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ করে ঘরে বসে থাকতে হবে। ৬০০ টাকায় মাংস বিক্রি করলে কেজিতে ৪০-৫০ টাকা ক্ষতি হইতো। কদিন আগে ভোক্তা অধিদপ্তর এর মিটিং হইছে সেখানে ৬৫০ টাকায় মাংস বিক্রি করার জন্য আদেশ দিয়েছে। তাই এখন ৬৫০ করে বিক্রি কিরছি। লাভ না হলেও লস নাই। তবে এখন ক্রেতাদের এক কেজি মাংসে ১০০গ্রাম চর্বি আর দুইশো গ্রাম হাড্ডি ওয়ালা মাংস দিতে হচ্ছে। আগে বেশি দামে মাংস বিক্রি করলেও সলিড জিনিস দিতাম।
সবজি বিক্রেতা সুমন মিয়া বলেন, গত সপ্তাহের চাইতে আজকে সব তরকারির দাম বেশি। কেজি প্রতি ১০-২০ টাকা বেশি দামে কিনে আনছি তাই বিক্রিও করতেছি বেশি দামে। দাম বেশি হবার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুইদিন বৃষ্টি ছিলো এছাড়া প্রচন্ড শীতে এবং ঘন কুয়াশার কারণে বাজার সবজির সরবরাহ কম। আর আমদানি কম থাকলে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। তবে আবার সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে বলে আশা করেন তিনি।
মাছ বিক্রেতা সালাউদ্দিন জানান, নদীনালা শুকিয়ে যাওয়ায় এবং অতিরিক্ত ঠান্ডা পড়ার কারণে বাজারে চাহিদার তুলনায় মাছ নেই বললেই চলে। যে রুই মাছ গত সপ্তাহে ২৮০ টাকায় বিক্রি করেছি তা আজকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া বড় সাইজের পাঙাশ ১০০০টাকা কেজি, চিংড়ি ছোট ৬০০-৭০০ আর বড় সাইজের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকা কেজি। এছাড়া বোয়াল ১০০০ টাকা, শিং ৬০০ টাকা, মলা ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এদিকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় অনেকেই বাজারে এসেছেন সপ্তাহের সকল বাজার করতে। দক্ষিন পাইকপাড়ার বাসিন্দা নাসির ছোট ছেলেকে নিয়ে বাজারে এসেছেন। তিনি বলেন, বাচ্চার জন্য মাছ মাংস কিনবো। আমার ছেলে মাছ খেতে ভালোবসে। কিন্তু বাজারে মাছের দাম গত সপ্তাহের চাইতে বেশি মনে হচ্ছে। এছাড়া সবজির বাজারও চড়া। যদিও মাংসের দাম কমায় একটু স্বস্তি ফিরে এসেছে। সরকারের উচিৎ বাজারের দাম আরও তদারকি করা দরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক
ইব্রাহিম শরীফ মুন্না
Email: [email protected]
© 2022 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || SongbadSomoy.com