বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনের জন্য লাল গোলাপ সংগ্রহ করতে চায় সবাই। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতির আঁচ এবার পড়েছে ফুলের বাজারে। প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ টাকা দামে। পাড়া-মহল্লার অস্থায়ী দোকানে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। ভারতীয় গোলাপ ১০০ থেকে ১২০ টাকা আর চায়না গোলাপ ১২০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামীকাল মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) একই দিনে বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে বেড়েছে ফুলের চাহিদা। এ সুযোগে গোলাপ, গাদা, চন্দ্রমল্লিকা, টিউলিপ ইচ্ছামতো দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। পাইকারি থেকে খুচরায় দামের পার্থক্যও বিস্তর। ক্রেতা কম, কৃষকরা বেশি দামে বিক্রি করছেন, উৎসবের সময় দাম বাড়ার-এসবকেই দাম বাড়ার কারণ বলছেন তারা।সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শাহবাগের পাইকারি ও খুচরা ফুলের বাজারে ক্রেতা ও মৌসুমি বিক্রেতার আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। পাড়া-মহল্লায় অস্থায়ী দোকানের জন্য যারা ফুল নিয়েছেন তারা দরদাম করেছেন। অন্যদিকে খুচরা দোকানে ক্রেতারা দোকানদারের চাওয়া অনুযায়ী টাকা দিয়েছেন।ফুলের পাইকারি ব্যবসায়ী ও মধুমতি দোকানের মালিক মো. নান্টু মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, এবার ক্রেতা কম। ফুলের দামও কম পাইকারিতে। ১০০ গোলাপ বিক্রি করছি দুই হাজার টাকায়, যেটা গত বছর ছিল ৪ হাজার টাকা। প্রতিটি ২০ টাকা পড়ছে। ১০০ সাদা বড় চন্দ্রমল্লিকা ৬০০, ছোট ৩০০ টাকা। ঝাড়বাড়া ১০ টাকা আটি, স্টার ১০০ ফুল ৩০০ টাকা, একশ গাইলার্ডিয়া ১২০০ টাকা। এদিকে একই ফুল শাহবাগের অন্য খুচরা দোকানগুলোতে যাওয়ার পর ১০-৩০ টাকা বেড়ে যায় ফুলের দাম। আর পাড়া মহল্লার মৌসুমি দোকানদাররা তা বিক্রি করেন আরও চড়া দামে। বিক্রেতারা বলছেন, ভালোবাসা দিবস ও ফাল্গুন উপলক্ষে এবার গাদা ফুলের চাহিদা বেশি। যেটার রোল পাইকারিতে ২০ টাকা, সেটা খুচরায় ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আবার অভিযোগ আছে দেশি গোলাপকে ক্যাপ পরিয়ে বিদেশি গোলাপ বলে বেশি দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।বাড়তি দাম প্রসঙ্গে মা আমেনা ফুল দোকানের বিক্রেতা মো. দুলাল খান জাগো নিউজকে বলেন, বাড়তি দাম দিয়ে কিনে আনায় বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এবারের বিক্রি এখনো শুরু হয়নি, আশা করছি কাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফুলের চাহিদা ভালোই থাকবে। মাহমুদা ফুল দোকানের বিক্রেতা আজিম অবশ্য বেশি দাম নেওয়ার কথাটা স্বীকার করলেন। বললেন, সারা বছর বিয়েও সামাজিক অনুষ্ঠানে ফুল বিক্রি হয়। তবে ফেব্রুয়ারি মাসে কিছু দিন খুব বেশি বিক্রি হয়। এজন্য বিক্রেতারা একটু চড়া দামেই বিক্রি করেন। কথা হয় মৌসুমি ফুল বিক্রেতা সাজেদুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ব্যবসার চেয়ে এটা আনন্দটাই বেশি। একদিন আমরা ফুল বিক্রি করি। সামান্য কিছু লাভ হয়। সে টাকা বন্ধুরা একসঙ্গে খরচ করি।বাহারি ফুলের বুকেট ও বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এছাড়া বিভিন্ন ফুলের মাথার ব্যান্ড বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ২০০ টাকায়। মারিসা ফুল ঘরের বিক্রেতা শরিফ বলেন, এবার ফুলের দাম বাড়তি। পাইকারির সঙ্গে খুচরায় দামের পার্থক্য হচ্ছে ফুলের কোয়ালিটির কারণে।মালঞ্চ ফুল কেন্দ্রের মালিক মামুনুর রশীদ জাগো নিউজকে বলেন, কৃষক বছরের কয়েকটা সময় রেট ভালো পায়। এ কারণে এবার দামটা বেশি। দাম তারাই বাড়িয়েছে। আমরা অনেক বেশি টাকা দিয়ে কিনেছি। তিনি বলেন, পাড়া-মহল্লায় তারা একদিনের ব্যবসা করে তাই দামটা একটু বেশি নেয়। এবার বেচাকেনা একটু কম। গতবারের তুলনায় এবার ক্রেতাও কম।
সম্পাদক ও প্রকাশক
ইব্রাহিম শরীফ মুন্না
Email: [email protected]
© 2022 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || SongbadSomoy.com